দোয়া কবুলের উত্তম সময়
দোয়া সবসময় কবুল হয়। বান্দা আল্লাকে যখনি ডাকেন তখনি আল্লাহ বান্দাদের ডাকে সারা দন। তারপরও হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের এতোই ভালো বাসতেন যে তিনি আমাদের জন্য আরো বিশেষ কিছু সময় উল্লেখ করেছেন,যাতে আমরা খুব সহজেই আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নিতে পারি। আল্লাহ সবসময়ই দোয়া কবুল করেন কিন্তু এই সময়ে দোয়া করলে দোয়া কবুলের সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।
১.আযান শেষ হয়ে যাবার পর (আবু দাঊদ:৫২৪)
2.লাইলাতুল কদরের রাতে (সূরা আল-কদরঃ ৯৭:১-৫)
3.শেষ রাতে এবং ফরজ সালাতসমূহের পরে (তিরমিযীঃ ৩৪৯৯)
4.আযান ও ইক্বামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।(আবু দাউদঃ ৫২১)
5.আরাফার দিন আরাফার ময়দানের দোয়া(তিরমিযীঃ ৩৫৮৫)
6.ইফতারের আগ পর্যন্ত রোযাদারের দোয়া(তিরমিযিঃ ৩৫৯৮)
7.যে ব্যক্তি ইসমে আযম-এর ওসীলা দিয়ে দোয়া করে(নাসাঈঃ ১৩০০)
8. বৃষ্টিরা সময় দোয়া(আবূ দাঊদঃ ২৫৪০)
9. ফরজ সালাতসমূহের পর দোয়া(তিরমিযীঃ ৩৪৯৯)
10. প্রতি রাতে শেষ এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে(বুখারীঃ ১১৪৫)
©
আব্দুল্লাহ্ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, একজন লোক বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! মুআযযিনদের মর্যাদা আমাদের চেয়ে বেশী হয়ে যাবে। তখন রাসূল (ﷺ) বললেন, ‘মুআযযিন্ যা বলে তুমিও তা বল। যখন আযান শেষ হয়ে যাবে তখন আল্লাহ্র কাছে চাও, যা চাইবে তা দেয়া হবে।
রেফারেন্স: হাসান। আবূ দাঊদঃ ৫২৪
©
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন –
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ ﴿١﴾ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ ﴿٢﴾ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ ﴿٣﴾ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ ﴿٤﴾ سَلَامٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ الْفَجْرِ ﴿٥﴾
(১) নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল ক্বাদরে।’ (২) তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী? (৩) ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। (৪) সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। (৫) শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।
রেফারেন্স: সূরা আল-কদরঃ ৯৭:১-৫
©
দোয়া কবুল কখন হয় সে সম্পর্কে নবী (ﷺ) বলেন, “শেষ রাতে এবং ফরজ সালাতসমূহের পরে।
রেফারেন্স: হাসান। তিরমিযীঃ ৩৪৯৯
©
আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) বলেন, “প্রতি রাতে শেষ এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে, আমাদের মহান রব নিকটতম আকাশে নেমে বলেন, যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো; যে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেবো; যে আমার কাছে মাফ চাইবে, আমি তাকে মাফ করে দেবো।” [১]
শেষ রাতে যারা (আল্লাহ্র কাছে) ক্ষমা চায়, তাদের প্রশংসা করে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন –
كَانُوا قَلِيلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ ﴿١٧﴾ وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ ﴿١٨﴾
(১৭) রাতের সামান্য অংশই এরা ঘুমিয়ে কাটাতো। (১৮) আর রাতের শেষ প্রহরে এরা ক্ষমা চাওয়ায় রত থাকত। [২]
রেফারেন্স: [১] বুখারীঃ ১১৪৫
[২] সূরা আয-যারিয়াতঃ ৫১: ১৭-১৮
©
আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) বলেন, “আযান ও ইক্বামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।”
রেফারেন্স: সহীহ। আবু দাউদঃ ৫২১
©
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আরাফাতের দিনের দু’আই উত্তম দু’আ। আমি ও আমার আগের নাবীগণ যা বলেছিলেন তার মধ্যে সর্বোত্তম কথা –
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيءٍ قَدِيرٌ
লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর
আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোনও মা’বুদ নেই, তিনি একক; তাঁর কোনও অংশীদার নেই; শাসনক্ষমতা তাঁর; প্রশংসাও তাঁরই; তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
রেফারেন্স: হাসান। তিরমিযীঃ ৩৫৮৫
©দোয়া নংঃ ৬৭ – রোযাদারের দোয়া
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না: ইফতারের আগ পর্যন্ত রোযাদারের দোয়া, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া ও মজলুমের দোয়া; আল্লাহ্ (তাদের) দোয়াকে মেঘমালার উপরে উঠিয়ে এর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেন। এরপর আল্লাহ্ বলেন, “আমার শক্তিমত্তার কসম! একটু পরে হলেও, আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব।
রেফারেন্স: হাসান। তিরমিযিঃ ৩৫৯৮
©
নবী (ﷺ) এক ব্যক্তিকে এ কথা বলে দোয়া করতে শুনেন –
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলূকা বিআন্না আশ-হাদু আন্নাকা আনতাল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতাল আ’হাদুস সামাদুল লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুন লাহু কুফুআন আ’হাদ
হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে চাই আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, একমাত্র তুমিই আল্লাহ্, তুমি ছাড়া কোনও হক্ব ইলাহ নেই, একক, অমুখাপেক্ষী, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারও থেকে জন্ম নেননি এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই।
তখন নবী (ﷺ) বলেন, “শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! সে আল্লাহ্কে তাঁর মহান নাম নিয়ে ডেকেছে, যে নাম নিয়ে ডাকা হলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নাম নিয়ে কিছু চাওয়া হলে তিনি তা দেন।”
রেফারেন্স: সহীহ। নাসাঈঃ ১৩০০
©
আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “দুটি (দোয়া) ফিরিয়ে দেওয়া হয় না, অথবা খুব কমই ফিরিয়ে দেওয়া হয়; আযানের সময় দোয়া এবং যখন যুদ্ধ তীব্র রূপ ধারণ করে।” অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, “বৃষ্টির সময়।”
রেফারেন্স: সহীহ। আবূ দাঊদঃ ২৫৪০
©
দোয়া কবুল কখন হয় সে সম্পর্কে নবী (ﷺ) বলেন, “শেষ রাতে এবং ফরজ সালাতসমূহের পরে।
রেফারেন্স: হাসান। তিরমিযীঃ ৩৪৯৯